সুগঠিত যুবাপুরুষ। মৃদু আলোকাভাসে দেখা গেল তার মুখের গ্রামীণ সরলতা। কিন্তু বিপুল প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে সংগ্রামের সংকল্পে তাতে যুক্ত হয়েছে এক অনভ্যস্ত কাঠিন্য। তার শিরোভূষণে মগধসম্রাটের উষ্ণীষটি মন্দালোকেও চিনতে ভুল হবার নয়। বক্ষের সম্মুখে দুই হস্তে আড়াআড়ি ধৃত অভিজ্ঞানটি যে রাজদণ্ড, তাতেও সন্দেহ নেই।…
—আমি সবই জানি, আচার্য। কিন্তু আমি শুধুই মুরা’র পুত্র, মৌর্য। চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য। পশ্চিম দিগন্তে হরিদ্রাভ নিশানাথের অপূর্ণ কলা দৃশ্যমান হয়েছে। নন্দসূর্য অস্তমিত হয়ে মগধের আকাশে নবোদিত চন্দ্রের উদ্ভাস ….
তথাগত বুদ্ধের মহাপ্রয়াণের পর শতাধিক বর্ষ অতিবাহিত। মগধের সিংহাসনে নন্দবংশের ইন্দ্রিয়াসত অযোগ্য রাজা ধননন্দ। ধননন্দের স্রষ্ট জ্ঞানসভায় অপমানিত হয়েছিলেন এক মেধাবী ব্রাহ্মণ। সেই জ্ঞানসভাতেই এক ভীষণ সংকল্প নিয়েছিলেন ব্রাহ্মণ- নন্দবংশের সমূলে উচ্ছে। তাঁর প্র অতঃপর আর্যাবর্তের রঙ্গমঞ্চে আবির্ভূত হয়েছিলেন জনৈক নামগোত্রহীন যুবক, চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য।
মরুনির্ঝর। এই রাগিণী সুরে সুরে বহন করছে মানুষের চিরন্তন বিরহবিলাপ । সুররাজ্যের সেই অমরাবতী নির্মিত হয়েছিল মরুধর ও নির্ঝরিণী নামে দুই মানুষ-মানুষীর মিলনে। কীভাবে সেই রাগিণী জড়িয়ে গেল মহাকালখণ্ডের মহাসন্ধিক্ষণে নন্দ-মৌর্য রাজনৈতিক পালাবদলের ঘটনাপ্রবাহে? মহাকালের মন্দিরায় কীভাবে বেজে উঠল হিংসা, বিদ্বেষ, সংঘাত, প্রেম ও সুরের আশ্চর্য সংগীত।
এ কাহিনী কোনো রাজবংশের ইতিহাস নয়। শুধু রাজনৈতিক গুপ্তহত্যা অথবা কূটনৈতিক চক্রান্ত এর আখ্যানবস্তু নয়। এ কাহিনী নন্দ ও মৌর্য বংশের যুগসন্ধির পটভূমিকায় গভীর মানবিক টানাপোড়েনে উৎপন্ন কিছু বিপন্ন মূল্যবোধের রক্তাক্ত ইতিবৃত্ত।
Reviews
There are no reviews yet.