ভয় পেতে কে না ভালোবাসে? আর ভয়ের গল্প মানেই গা শিরশিরে একটা অদ্ভুত অনুভূতি, যাতে মনও বিবশ হয়ে যায়। তবে ভয় মানেই যে শুধু ভূত, তা নয়। অনেকসময়েই ভয়টা আসে মনের গভীর কোনো এক উৎস থেকে। আমাদের মনের অন্ধকার দিকগুলো ফুটে ওঠে এমন কিছু কাজে, যা তীব্র এক ভয়ের উদ্রেক করে। আসলে প্রকৃতিতে রহস্যের আদি নেই, অন্ত নেই। এখনও বিভিন্ন বিষয়ের ব্যাখ্যা খুঁজে চলেছে গবেষকরা। আর, মন তো প্রকৃতিরই অংশ। মনের অন্ধকার দিকই যখন ভয় দেখায় আমাদের, সেই ভয় হয় অবর্ণনীয়। মনের এরকমই অন্ধকার দিকগুলো নিয়ে পনেরোটি গল্পের এই গল্প-সংকলন ‘অনুভবে অন্ধ কার’। লেখক-লেখিকার নিপুন মন-রঙের চিত্রপটের মতোই এক একটি গল্প।
সুদূর অজপাড়াগাঁ থেকে পিসীমার চিঠি এসেছে, বোনের খুব অসুখ। প্রভাত তাড়াতাড়ি রওনা দেয়, তবু ট্রেন লেটের জন্য শেষ ফেরিটাও ধরতে পারে না। এদিকে প্রবল ঝড়-বৃষ্টিতে দামোদর ফুঁসে উঠেছে। সেই কতদিন আগে মায়ের ডাকে এক মহাপুরুষ প্রবল বৃষ্টিতেও দামোদর পেরিয়েছিল, প্রভাত কি সেরকমই কিছু করবে? জানতে হলে পড়ুন, মোহনা দেবরায়ের গল্প, ‘ডাক’। কমলিকার অপছন্দের মানুষ বা জিনিসকে কেউ পৃথিবী থেকে একেবারে নিশ্চিহ্ন করে দিচ্ছে। কমলিকা কি জানে তার পরিচয়? এর উত্তর পাওয়া যাবে রাণু শীলের লেখা ‘সে’ গল্পে। জন্ম হলে মৃত্যু অবধারিত। তবু মৃত্যুকে বড় ভয় সবার। কিন্তু সেই ভয় যখন ফোবিয়ায় পরিণত হয়, তা কি মৃত্যুর থেকেও ভয়ঙ্কর নয়? এই ধরণের এক ফোবিয়াকে নিয়েই স্বর্ণেন্দু কুন্ডুর লেখা, ‘জন্মিলে মরিতে হইবে। হিন্দুধর্ম অনুযায়ী, বিবাহের পর স্ত্রীকে অর্ধাঙ্গিনী বলা হয়। কিন্তু কোনো স্ত্রী যদি নিজেকে আক্ষরিক অর্থেই অর্ধাঙ্গিনী ভাবতে শুরু করে! এমনই এক ঘটনার দোলাচল এঁকেছেন রিয়া মিত্র তাঁর ছোটগল্প, ‘অর্ধাঙ্গিনী’-তে। এরকমই আরও কিছু গল্প দিয়ে বিন্যস্ত হয়েছে ‘আমরা কলমচি’ নিবেদিত, পালক পাবলিশার্স দ্বারা প্রকাশিত সাইকোলজিক্যাল হরর গল্পের সংকলন ‘অনুভবে অন্ধকার’। লেখকদের মননশীলতা, গল্পের বিষয়বস্তু ও চলন লক্ষ্য করলে বোঝা যায় এই সংকলন পাঠক-খিদে নিবৃত্তি সক্ষম হবে।
Reviews
There are no reviews yet.