Description
তাঁর এই সৃষ্টিকর্মকে উপন্যাস-রূপে আখ্যাতকরতে রাজি নন বুদ্ধদেব গুহ। এ-গ্রন্থের স্বল্পায়ত একটি ভূমিকায় লিখেছেন তিনি: “অবরোহী উপন্যাস নয়, যদিও দেশ-এ প্রকাশিত হবার সময় বিজ্ঞাপিত হয়েছিল উপন্যাস হিসেবেই। প্রথম দিকে এর ঋতি হয়তো উপন্যাসেরই মতো ছিল। কিন্তু কয়েক কিস্তি পরেই ঋতিকে বদলে দিই।” জানিয়েছেন, যত-না নন্দিত তার ঢের বেশি ‘নিন্দিত’ এই রচনা শেষাবধি সম্ভবত কোলাজধর্মী এক সৃষ্টি হয়ে উঠেছে।সত্যি কি তাই?এ-তর্কের মীমাংসা করুন পাঠক-সমালোচকরা। কিন্তু একটা ব্যাপার স্পষ্ট যে, প্রচলিত ধারায় এক ব্যতিক্রমী সংযোজন অবরোহী। পাঠকের বহুলালিত সংস্কার ও উপন্যাসের বহুপ্রতিষ্ঠিত সংজ্ঞার্থকেই চ্যালেঞ্জ করে, এমন এক রচনা। আর সেই কারণেই সম্ভবত এই সৃষ্টিকর্মের আত্মা এমন সাহিত্যাশ্রয়ী।ঝুমরি-তিলাইয়া স্টেশনে দীর্ঘকাল পরে দেখা হল অর্যমার সঙ্গে তাঁর প্রাক্তন ছাত্রী যোজনগন্ধার। কম্পুটার-বিশারদ, স্বনির্ভর, যোজনগন্ধা এখন থাকে দিল্লিতে। আর প্রখর আত্মমর্যাদাশালী, সূক্ষ্ম রুচিশীল, লেখক অর্যমা রায় প্রবল অভিমানে কলকাতা ছেড়ে দশ বছর যাবৎ হাজারিবাগবাসী। লেখকদের মধ্যে ঈর্ষা-নিন্দা-মাৎসর্য দেখে, দলবদ্ধ চক্রান্তের শিকার হয়ে, বীতশ্রদ্ধ অর্যমা বেছে নিয়েছে অবরোহণের তথা মুক্তির পথ। যোজনগন্ধার সঙ্গে অর্যমার গড়ে উঠল পত্রবিনিময়ের এক নতুন সম্পর্ক। ঠিক প্রেমপত্র নয়, অন্য স্বাদের সেতুবন্ধন। একজন সৎ লেখকের সঙ্গে মনস্ক, গভীর, বুদ্ধিমতী এক পাঠিকার এই পত্রাবলির মধ্যে সাহিত্যিকের দায়িত্ব ও সাহিত্যের আদর্শ, আদর্শ পাঠক, সমকাল ও ভাবীকালের সাহিত্যের চেহারা, লেখকের জীবনযাপনের ধরন, ঈশ্বরবোধ— এমন বহু বিষয়ের উষ্ণ ও অন্তরঙ্গ আলোচনা। এই আলোচনার মধ্যে বহু নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে আলোকসম্পাত।সাহিত্যের আগ্রহী পাঠককে পড়তেই হবে এই বই। একবার এবং বারবার।
drluvu –
Classic bengali literature with linguistic touch