Description
একদিন মেট্রো স্টেশনে কলেজ জীবনের বন্ধু সুবর্ণার সঙ্গে হঠাৎই দেখা হয়ে গেল তিতিরের। বহুদিন ওদের কোনও যোগাযোগ ছিল না। এর মধ্যে টিভি সিরিয়ালে অভিনয় করে সুবর্ণার কিছুটা পরিচিতি হয়েছে। তিতির এম. এ. পাশ করে চাকরির চেষ্টায়। ওর বাবার ইচ্ছে, মেয়ের এবার বিয়ে দেবেন। তিতিরের তীব্র আপত্তি। নিজের পায়ে না-দাঁড়িয়ে ও বিয়ে করবে না। সুবর্ণা ওকে প্রস্তাব দেয় টিভি সিরিয়ালে অভিনয় করার জন্য। তিতির রাজি হয়ে গেল। বাড়িতে কাউকে কিছু না জানিয়ে বিভাসদার সঙ্গে দেখা করে তিতির। সিরিয়ালের কাজে ওকে পছন্দ করল বিভাসদা। কিন্তু ওর এই বৃত্তিকে বাড়ির কেউ প্রথম ধাক্কায় মেনে নিতে পারল না। তবু স্বনির্ভরতায় বিশ্বাসী তিতির মাটিতে শক্ত পা রাখল। প্রায় একই সময়ে ওর বউদি রঞ্জনা, যে এতদিন মধ্যবিত্ত ঘরের ভাল বউমাটি হয়ে জীবন কাটিয়ে দিচ্ছিল, পুরনো বন্ধু উপাসনার উৎসাহে ওরই ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিতে চাকরি নিল। স্বাবলম্বী রঞ্জনা পেল অন্য জীবনের স্বাদ। কেননা এরই মধ্যে সুবীরের সঙ্গে দাম্পত্যজীবনে সে আবিষ্কার করেছে এক একটি দীর্ঘ অন্ধকারে ভরা টানেল। যে-সুড়ঙ্গ পথ ওকে কোথাও পৌঁছে দেবে না। রঞ্জনা চাকরি নেওয়ার পরপরই সুবীর মদ্যপান শুরু করল। অথচ একজনের স্বামী, একজনের দাদা এবং এক দম্পতির সন্তান হিসেবে সুবীর জীবনের কোথাও দাগ রাখতে পারেনি। নিজেকে চিরাচরিত মধ্যবিত্ততার ছকে বন্দি করে রেখেছে এই শূন্যগর্ভ মানুষটি। রঞ্জনার শ্বশুর অত্যন্ত ভালমানুষ। কিন্তু শাশুড়ি, নিজের স্বামীর সম্পর্কে তাঁর একরাশ অভিযোগ, মুখোশপরা পুত্রের প্রতি পক্ষপাতিত্ব আর পুত্রবধূ ও কন্যাকে নিয়ে তিনি যেন বিব্রত। অভিনেত্রী জীবনের নানা ঘটনার ঢেউয়ে ভাসতে ভাসতে তিতিরের জীবনতরী এসে একদিন পৌঁছল কৃশাণুর সঙ্গে তার পরিণয়-স্বপ্নের জগতে। অন্যদিকে সুবীরের সঙ্গে রঞ্জনার বিবাহবিচ্ছেদ অনিবার্য হয়ে উঠল। কিন্তু কেন? কোন পথে এবার যাবে রঞ্জনা ? তিতির ও রঞ্জনার এই কাহিনী জীবনের দুটি ভিন্ন আঙিনায় আলো ফেলেছে। আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পারে, সেই আলো তির্যক, তীব্র, কিন্তু একটু তলিয়ে দেখলেই অনুভব করা যায় তিতিরের জীবনে যেমন জ্বলে উঠেছে উত্তরণের আলো, তেমনই রঞ্জনার জীবনেও। সমরেশ মজুমদারের লেখা সম্পূর্ণ ভিন্ন স্বাদের এই উপন্যাস ‘হিরে বসানো সোনার ফুল’।
Aditi Sannigrahi –
Good book