Description
কৃষ্ণ কি স্বয়ং ভগবান না কি বিরাট মাপের এক ব্যক্তিত্ব, সামান্য এক গোপপল্লী থেকে বিস্ময়কর একক কৃতিত্বে যিনি সমগ্র ভারতবর্ষের রাজনৈতিক ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে এসে দাঁড়িয়েছিলেন? মহাভারতের যুদ্ধ কি শুধুই কুরুপাণ্ডবের যুদ্ধ, নাকি ভারতের পূর্ব-দক্ষিণ শক্তির উপর উত্তর-পশ্চিম ভারতীয় শক্তির আধিপত্য বিস্তারের জন্য সারা ভারতবর্ষ জুড়ে সেকালে যে রাজনৈতিক তথা কূটনৈতিক যুদ্ধ হয়েছিল, তারই ইতিবৃত্ত ? নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ীর লেখার সঙ্গে যাঁদের পরিচয় রয়েছে তাঁরা সকলেই জানেন যে, সংস্কৃত সাহিত্যে তাঁর অধিকার কত গভীর ও সুবিস্তৃত। এবং এও তাঁরা লক্ষ করেছেন যে, নৃসিংহপ্রসাদের কোনও কথাই কল্পনাপ্রসূত নয়। তাঁর বক্তব্যের সমর্থনে তিনি সবসময়ই তুলে আনেন মূল সংস্কৃত সাহিত্যের প্রাসঙ্গিক উদ্ধৃতি, যথাসম্ভব অবিকৃত অবস্থায় জুড়ে দেন তার বাংলা অনুবাদ কি ব্যাখ্যা। তা সত্ত্বেও প্রতিটি রচনাতেই তিনি যে হয়ে ওঠেন চমকপ্রদ কি তথ্যে, কি ভাষ্যে-তার কারণ, সম্ভবত, নৃসিংহপ্রসাদের অপূর্ব দৃষ্টিকোণ। এমনই একটি সম্পূর্ণ অভিনব দৃষ্টিকোণ থেকে নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী এই অসামান্য গ্রন্থে ব্যাখ্যা করেছেন কৃষ্ণ-চরিত্রের রাজনৈতিক উপাদানগুলি এবং একইসঙ্গে এঁকেছেন সেকালের একটি পূর্ণাঙ্গ ভারতচিত্র। দেখিয়েছেন, আজকের দিনে পূর্ব এবং দক্ষিণ ভারতীয় রাজাগুলির উপর কেন্দ্রের যে-বঞ্চনার কথা আমরা বিভিন্ন কথাপ্রসঙ্গে বারবার বলি, তার বীজ উপ্ত হয়েছিল মহাভারতের ভারতযুদ্ধের সময় থেকেই। নৃসিংহপ্রসাদের শক্তিশালী কলমে এ-গ্রন্থে বিধৃত কৃষ্ণের ক্রমিক রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠার অনন্য চলচ্চিত্র,ভারতযুদ্ধের কূটনীতিসমূহের পরিচয় উদঘাটন, এবং, সর্বোপরি, সেকালের সঙ্গে একালের মেলবন্ধন-সূত্রআবিষ্কারের তাৎপর্যমূলক প্রয়াস- এর কিছুই লেখকের স্বকপোলকল্পনার ফসল নয়। হরিবংশ, মহাভারত এবং বিবিধ পুরাণ থেকেই সংগৃহীত হয়েছে প্রতিটি উপাদান। অননুকরণীয় পদ্ধতিতে ব্যাখ্যার কাজটি শুধু নৃসিংহপ্রসাদের নিজস্ব। তাঁর তথ্যের বিপুল সংগ্রহ সম্ভ্রম জাগায়, বিশ্লেষণ করে মুগ্ধ। ‘বাল্মীকির রাম ও রামায়ণ’-এর মতো এ-গ্রন্থটিও প্রতিটি বাঙালীর অবশ্যপাঠ্য।
Reviews
There are no reviews yet.