Description
উপন্যাসের প্রধান চরিত্র পরাগ ও তিস্তার প্রথম সাক্ষাৎ শান্তিনিকেতনে বসন্তোৎসবের দিনে। এরপর প্রায়ই তাদের দেখা হতে থাকে।
“তিস্তা নিশ্চিতভাবে বুঝতে পারল অলক্ষ্যে কোনও এক মহান শক্তিমান কলকাঠি নাড়তে শুরু করেছেন। ছেলেটার সঙ্গে তার প্রায়ই দেখা হবে।” ঘন ঘন দেখা সাক্ষাৎ থেকে শুরু হল প্রেম। সেই প্রেমই সমুদ্রের ধারে এক প্রবল ঝড়-বৃষ্টির সন্ধেতে তিস্তার সব হিসেব গোলমাল করে দিল। অসময়েই চলে আসে সন্তান। পরাগ আপ্লুত হলেও তিস্তা কিন্তু গ্রাহ্য করে না। দিদি জামাইবাবুর পরামর্শমতো পরাগের মতামত ছাড়াই সে সিদ্ধান্ত নেয় বাচ্চাটি নষ্ট করে দেওয়ার।
ইন্ডিয়ান আর্ট কলেজের ফাইন আর্টসের পাশ করা ছেলে পরাগ। অসাধারণ ছবি আঁকে সে। বর্তমানে এক পটারিতে কাজ করে। শিল্পকর্মটি ঠিক মত করে যাওয়াই তার একমাত্র উচ্চাকাঙ্ক্ষা। প্রেম তার কাছে যত না কামনার তার থেকেই বেশি স্বপ্ন দেখার বিশ্বস্ত আধার। ভালোবাসার মানুষ তিস্তার প্রতি বিশ্বাসেই সে ভেবেছিল তিস্তা নিশ্চয়ই বাচ্চাটি নষ্ট করবে না। কিন্তু পরাগ যখন জানতে পারল তার ভালোবাসার মানুষ তাদের ভালোবাসার চিহ্নকে রাখতে চায় না, তখন বিস্ময়ে, ক্ষোভে অতিরিক্ত মদ্যপান করে বাড়ি ফেরার পথে শ্রীরামপুর স্টেশনে নামার সময় তার চোখে পড়ে ফাঁকা ট্রেনের কামড়ায় এক স্পেশাল চাইল্ডকে। সে প্রথমে না চাইলেও, ধীরে ধীরে সে জড়িয়ে পড়তে থাকে সেই স্পেশাল চাইল্ডের জীবনের সাথে।
স্পেশাল চাইল্ড অর্থাৎ হিজল(রানা), তার ভূমিকা এখানে অনেক। তাকে কেন্দ্র করেই বদলে যেতে থাকে পরাগ ও দূর্বার জীবন। দূর্বা হলো হিজলের দিদি। ভাইয়ের প্রতি দূর্বার অগাধ ভালোবাসা। খুব অল্প বয়সেই সে ভীষণ পরিণত। জীবনের কালো অধ্যায়ই বোধ হয় তাকে এত অল্প বয়সে পরিণত করে তুলেছে।
“দূর্বার মুখের দিকে তাকায় পরাগ, মেয়েটার মনের ভেতর অনেক খোপ, কোনও খোপে মায়া, কোনওটায় ক্রোধ, ঘৃণা, ভালবাসা, কাম… এর সঙ্গে মেশাটাই একটা জার্নি।”
উপন্যাসের আরেক অন্যতম প্রধান চরিত্র যোগব্রত। মধ্যবিত্ত পরিবারের মেধাবী ছাত্র গত দশ বছর ধরে আমেরিকায় চাকরিরত, এখন সাফল্য ও উন্নতির শেষ চূড়ায়। তবে সাফল্যের সাথে গ্রাস করেছে একাকীত্ব। বিদেশ থেকে কিছুদিনের ছুটি নিয়ে মাতৃভূমির টানে সে চলে আসে কলকাতায়। তার খুব ইচ্ছে দেশে পাকাপাকিভাবে ফিরে এসে দেশের গ্রাম বৈঁচিগ্রামের পৈত্রিক জমিতে বাড়ি করে থাকবে। কেউ সেভাবে বললে, থেকে যাবে।
এদিকে দেশে কয়েকটি দিন থাকাকালীন একদিন যোগব্রত উপস্থিত হয় তিস্তাদের বাড়িতে। তিস্তার বাবা দিবাকর শিক্ষকের ছাত্র ছিল সে। তিস্তাকে দেখে যেন কিছুটা অতীত ফিরে পায় সে। অন্যদিকে পরাগের উপেক্ষায় তিস্তা তখন বিষণ্ণ। যোগব্রতর স্নিগ্ধ উপস্থিতি তাকে নতুন জীবনের আশ্বাস দেয়। যোগব্রতর সাথে চলে যেতে চায় সে আমেরিকায়। ভুলে যেতে চায় অন্ধকার অতীতটাকে। কী হয় শেষ পর্যন্ত? তিস্তা তো যাবেই, কিন্তু কোন পথে যায় সে? যোগব্রতর সাথে আমেরিকায় নাকি ফিরে যায় পরাগের কাছে?
শেষ হয়েও যেন হইলো না শেষ
Aditi Sannigrahi (verified owner) –
Good one