অন্যদের কাছে যা ছিল শুধুই বল, তাঁর কাছে তা ছিল ঘুপচি, অন্ধকার জীবন থেকে বেরোনোর একমাত্র ‘টানেল’। তাই অন্য কেউ নিয়ে নিতে পারে, এই আশঙ্কায় তিন বছরের জন্মদিনে পাওয়া বলটা নিয়ে রাতের পর রাত শুতে যাওয়া। সেই ‘টানেল’ যে সচেতন ভাবে তিনি বেছে নিয়েছিলেন তা নয়, কোনও জিনিসের সঙ্গে বা কারওর সঙ্গে কারওর যেমন ‘কসমিক’ সম্পর্ক গড়ে ওঠে, তেমন ভাবেই বলের সঙ্গে তৈরি হয়েছিল তাঁর ‘কসমিক’ সংযোগ। যা পাল্টে দিয়েছিল শুধু তাঁর জীবনই নয়, একটা গোটা দেশ, একটা গোটা প্রজন্মের জীবন…
তিনি যখন বল পায়ে নিয়ে দৌড়নো শুরু করতেন, তখন তাঁর সঙ্গে দৌড়তে শুরু করত একটা গোটা দেশ, সমগ্র বিশ্বের সমস্ত গরিব মানুষ, ভাল করে না খেতে পাওয়া দরিদ্রের দল। মাঠের মধ্যে বল পায়ে নিয়ে তাঁর যে গতি, সেই একই গতি ব্যক্তিগত জীবনেও ছিল। যে কারণে কক্ষচ্যুত হওয়াটাও যেন এক রকম অবশ্যম্ভাবীই ছিল! তাই কখনও ডোপিং, কখনও মাত্রাতিরিক্ত নেশা, অনিয়ন্ত্রিত জীবনের বৃহে ঢুকে পড়েছিলেন। তারপরেও যখন জেনেছেন, জীবন বলতে শুধুই বাড়ির মধ্যে সাজিয়ে রাখা কতগুলি নিষ্প্রাণ পালক, মুকুট-সংস্রব নয়, তখনও তাঁর সামনে ওই সমুদ্র ধরা পড়েছে। কত দিন যখন জনরাশির মধ্যে দাঁড়িয়ে থেকেছেন, যখন ক্লান্ত, বিধ্বস্ত, অপমানিত, খুঁজে পেতে চেয়েছেন নিজেকে, পাচ্ছেন না, তখনও তাঁর দিকে ছুড়ে দেওয়া তির, বুলেট, কুৎসিত আক্রমণের বাইরে নিজেকে বার করে এনে দেখেছেন ওই অনস্তকে। আশপাশ থেকে তির, বুলেট খসে পড়েছে তখন, কেউ তাঁকে স্পর্শ করতে পারেনি…
Reviews
There are no reviews yet.