যে সময়রেখা ধরে ঘটনাক্রম এগিয়েছে তখন তিব্বতে রাজশক্তি নয়, বৌদ্ধ মঠের ক্ষমতাই সর্বোচ্চ। পূর্বে স্বাক্ষরিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি অস্বীকার করে চিনা সৈন্য ক্রমাগত বৌদ্ধ মঠের দখল নিতে সচেষ্ট। দেশের ধর্মপ্রাণ সরল মানুষেরা রাজশক্তির শোষণ, বিদেশি শক্তির আক্রমণ, ধর্মীয় রীতিনীতির নামে অত্যাচার ক্রমাগত সহ্য করতে করতে বিদ্রোহী হয়ে উঠছে। এ কাহিনির সময়কাল ১৯৩২ থেকে ১৯৪৬ সালের তিব্বত। রাজ্যে অনেক সুবর্ণকার, মণিকার থাকতেও বিলাস-ব্যসনে মজে থাকা রাজকুমারী নিজের আমোদকক্ষে তলব করে কামারকে। লাস্যময় প্রেম নিবেদন করে তাকে অলংকার তৈরির বরাত দেয়, যা আসলে গুপ্ত অস্ত্র। সরল কামার জিনপা জড়িয়ে পড়ে রাজপ্রাসাদের অলিন্দ-রাজনীতিতে। ক্রমে বৌদ্ধ মঠ, চিনা সৈন্যবাহিনী এবং যৌথ কমিশনের সঙ্গে রাজপ্রাসাদের ক্ষমতার রাজনীতির যে চতুর্ভুজ, তার পঙ্কিল আবর্তে জড়িয়ে যায় সে। দুই মঠের দুই ক্ষমতাশালী সন্ন্যাসী ইয়েশে ও লোবসাং, রানি সামতেন, জিনপা-র স্ত্রী পেমা সকলেই এ কাহিনির কুশীলব। ক্ষমতাশালী প্রধান মঠের উত্তরাধিকারী পদে অভিষিক্ত ছোট্ট শিশু, দাচেন-ও সঙ্গী এই নির্মম আবর্তের। সকলেই নিজের মতো করে এগিয়ে যেতে চায়, লড়াই করে শত্রুর বিরুদ্ধে। কিন্তু, তাদের সব বহির্জগতের লড়াই যেন প্রবেশ করে অন্তরে। বৌদ্ধধর্ম-সংস্কৃতির পরিমণ্ডলে পরিব্যাপ্ত এই উপন্যাস আমাদের নতুন করে চিনিয়ে দেয় জীবন ও জৈবিকতার অন্যতর রসায়ন।
যুক্তিবাদী, প্রতিবাদী, আবেগপ্রবণ ও সহানুভূতিশীল মনের লড়াই এবং আহত হওয়া দুইই বেশি, তবে তা সৎ শিল্পসৃষ্টির জন্য এক জরুরি উপাদান। সেই পাথেয়টুকু নিয়েই লেখকের সাহিত্যসৃষ্টির পথচলা শুরু। ধর্ম, রাজনীতি, ব্যক্তিস্বার্থ, মানবতাবাদ, মনস্তত্ত্ব, ইত্যাদি নিয়ে পড়াশোনা ও চিন্তাভাবনা শুরু ছোট থেকেই। স্কুলজীবনেই বাংলা ও ইংরেজি কবিতা এবং গল্প লেখায় হাতেখড়ি। এরপর চাকরি ও উপার্জনের তাগিদে ব্যস্ত কর্মজীবন। বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা, সেখান থেকে তথ্যপ্রযুক্তি, বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ও কর্পোরেট জীবনে প্রবেশ। বহুবছর প্রবাসে থাকাকালীন সেখানকার সংবাদপত্র ও কিছু পত্রিকায় লেখা প্রকাশ। সঙ্গে ফটোগ্রাফি ও ছবি আঁকা। বহু দৈনিক সংবাদপত্র ও বিভিন্ন পত্রিকায় গল্প প্রকাশিত হয়েছে এবং একটি গল্পসংকলনও বই আকারে প্রকাশ পেয়েছে বছর তিনেক আগে।
Reviews
There are no reviews yet.