উত্তরবঙ্গের বদনপুর গ্রাম লোকমুখে পরিচিত ‘মড়াদের গ্রাম’ নামে। অদ্ভুত সেই গ্রামে রয়েছে গোটা অঞ্চলের একমাত্র শ্মশান, যেখানে কোন না কোনদিন পুড়তে আসে আশপাশের সমস্ত গ্রামের মানুষ।
মধ্য ত্রিশের ঝকঝকে তরুণী দিব্যদর্শিনী সেন রাস্ট্রায়ত্ব ব্যাংকের অফিসার। জীবনের এক মর্মন্তুদ সন্ধিক্ষণে যখন নিজেকে শেষ করে দেওয়ার চিন্তায় সে মশগুল, তখনই বদনপুর ব্যাংকের ম্যানেজার হয়ে আসতে হয় তাকে। গ্রামের কোথাও থাকার জন্য ঘরভাড়া না পেয়ে তার থাকার জায়গা হয় শ্মশানলাগোয়া এক বাড়িতে…।
নাগরিক জীবনে অভ্যস্ত দিব্যদর্শিনী দুঃসহ শোকের মাঝেও মুখোমুখি হয় এক অচেনা ভারতবর্ষের। যেখানে দু-বেলা ভরপেট খেতে পাওয়াটাই বিলাসিতা, সেখানে দাঁড়িয়ে রুরাল ব্যাংকিং এর প্রতিটি স্তরে প্রবল বাধার সম্মুখীন হতে হয় তাকে। নিজের পুঁথিগত বিদ্যা, হাতেকলমে ব্যাংকিং এর অভিজ্ঞতা সেখানে হার মানে, রাশ টেনে ধরে অচেনা আবেগ। মুখোমুখি হতে হয় অদ্ভুত সব অভিজ্ঞতার। নানাবিধ জাতি উপজাতির সান্নিধ্যে আসতে হয় তাকে। আদিবাসী রমণীরা তাকে দেয় নতুন জীবনের পাঠ। বিস্ময়কর সমস্ত চরিত্রের দেখা মেলে তার জীবনপথে। পূর্ববঙ্গে সর্বস্ব ফেলে আসা রুক্ষস্বভাবা কর্কশ প্রৌঢ়াই হোক বা শ্মশানের ডোম, দিব্যদর্শিনীকে তারা ভাবতে শেখায় নতুন করে।
শ্মশানের মড়াপোড়া গন্ধের মাঝে দিন শুরু হয় দিব্যদর্শিনীর। শ্মশানের সঙ্গে বসবাস করতে করতে তার ইগো, তার অভিমানবোধ, তার অহং মিশে যায় ধুলোয়। প্রেম অপ্রেম হিংসা মিথ্যা প্রতারণা প্রবঞ্চনা ক্রমশ ঠুনকো লাগতে থাকে দিব্যদর্শিনীর চোখে। ক্রমশ সে উপলব্ধি করে, সবই গুরুত্বহীন, চিরন্তন সত্য লুক্কায়িত রয়েছে চেতনা লাভে। উত্তরণে। ‘উত্তিষ্ঠত জাগ্রত’তে। তার মহাপণ্ডিত বাবা উপনিষদের যে শ্লোক আবৃত্তি করতেন, শংকরাচার্যের যে ভাষ্য উদ্ধৃত করে বোঝাতেন, গ্রামের সহজ সরল মানুষগুলোর কথাতেও যেন সেই আধুনিক এক ব্যাংকারের সঙ্গে শখের এক ডোমের তৈরি হয় এক অদ্ভুত উদাসীন সম্পর্ক, যা ফেলা যায় না কোন চেনা সমীকরণে।
স্থূলদৃষ্টিতে ভারতবর্ষের গ্রামীণ ব্যাংক ব্যবস্থা অব্যবস্থার কথা তুলে ধরে এই উপন্যাস। হিসেব করে রুরাল ব্যাংকিং এর ব্যালান্স শিটের। সূক্ষ্মদৃষ্টিতে সমান্তরালে লেখা হয় অন্য এক ব্যালান্স শিট, যা নিঃস্পৃহভাবে হিসেব করে মানুষের চাওয়া পাওয়া, পাপ পুণ্যের, আধ্যাত্মিক সংকটের। কোনটা ডেবিট, কোনটা ক্রেডিট, কোনটা অ্যাসেট, কোনটা আসলে লায়াবিলিটি, তা বুঝতে ধাঁধা লেগে যায় এই অগণিত চরিত্রের আশ্চর্য উপন্যাসে। জাগ্রত, সুষুপ্তি দশা পেরিয়ে প্রশান্ত মন ছুটে চলে তুরীয় অবস্থার দিকে।

Weight 1 kg
Dimensions 21 × 18 × 2 cm
Author Name

Binding

Hardcover

Language

Publisher

Publishing Year

Pages

415

1 review for Balance Sheet || Debarati Mukhopadhyay || ব্যালান্স শিট || দেবারাতি মুখোপাধ্যায়

  1. Suraj Routh (verified owner)

    Read up to pages 236 – 237 of the book, this far it was a great reading; the writing style of Debarati is awesome. An experience of flow while reading!

Add a review

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may also like…

Recently Viewed

  • Recently Viewed Products is a function which helps you keep track of your recent viewing history.
    Shop Now
Balance Sheet || Debarati Mukhopadhyay || ব্যালান্স শিট || দেবারাতি মুখোপাধ্যায়
Original price was: ₹500.Current price is: ₹375.

In stock

Estimated delivery on 25 - 28 March, 2025