সিনেমার নয়, এই বইটা সেতুবন্ধনের। বিপরীত ধর্মী নানা ভাবনার মধ্যে যোগস্থাপনের। উদাহরণ দিই। সত্যজিতের একবার দরকার হয়েছিল নতুন জাতের মেঝে। এমন এক নকশার মেঝে, যা পৃথিবীর কোনও স্থাপত্যেই ছিল না। নেইও।
কোথায় সেই নকশার সুত্র। বই নয়, সত্যজিৎ হাতে নিলেন ফল। একটি আপেল।। স্রেফ এক ফালি কেটে নিলেন ছুরি দিয়ে। দেখলেন, আপেলের বুকে লুকনো আশ্চর্য এক নকশা। সেই নকশা থেকেই তৈরি হল শুন্ডীরাজার মেঝে। সত্যজিৎ পৃথিবীর প্রথম আর্কিটেক্ট, যিনি আপেল থেকে পৌঁছে গেলেন আর্কিটেকচার-এ। সৃজনশীলতার এমন পরিচয় মানবজাতির ইতিহাসে ক’বার দেখেছি? এভাবেই ‘দি এলিয়েন’ চিত্রনাট্যে সত্যজিৎ ট্রিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরের এক নক্ষত্র-মন্ডলীর কোনও এক ভাষার সঙ্গে মিশিয়েছেন বাংলার গ্রামের ভিখারী বালকের ভাবাকে। কখনও ভুবনজোড়া মানব-স্রোতের সম্মিলিত ইচ্ছাশক্তির মধ্যেই দেখতে পেয়েছেন পদার্থ-বিজ্ঞানের অভাবনীয় এক বিকশে। এই রকম নানা মিলনের ছড়াছড়ি এই বই। জ্ঞান-চর্চায় এ এক নতুন কনসেপ্ট। মস্তিষ্কের অজানা ও অগণিত নানা অংশে এখন আমরা নেভিগেট করতে পারি এই connectome-এর সাহায্যে। ঠিক সেভাবেই নানা সত্যজিতের মধ্যে নেভিগেট করার জন্য বিপুল connectome-এর সন্ধান দিয়েছে এই বই। এমন প্রয়াস আর হয়নি।
একই সঙ্গে এখানে ছাপা হয়েছে সত্যজিতের আকা ১৬ টা রঙিন ছবি। সঙ্গে বিশ্লেষণ। যা সবচেয়ে বিশ্বাকের, তা হল, ‘বোসন’-এর প্রবত্তব সত্যেন্দ্রনাথ বসুর জন্য সত্যজিৎ কীভাবে এঁকেছিলেন ভবিষ্যৎ-মানুষের অনাগত গণিত। “সত্যজিতীয় গণিত” মানুষের সামনে আসছে এই প্রথম।
Reviews
There are no reviews yet.