স্মৃতির অতল তলিয়ে ঘাঁটার অভ্যাসে ‘স্থান’ মাহাত্ম্যের অনুঘটকপ্রতিম ভূমিকা অনস্বীকার্য। জন্ম এবং পরবর্তী সাংসারিক অথবা কর্মসূত্রে লেখকের তরফে পরিযায়ী যাপন উদ্ভূত অভিজ্ঞতা তাই অনিবার্যভাবেই শাসন করেছে রোমন্থনজনিত অভ্যাসের আংশিক পরিধিকে।
প্রহরবৃত্তের ঘূর্ণায়মান কেন্দ্রে নিজেকে স্থিত রাখার আসক্তি আসলে বর্তমানকে অতীতের চাদরে ঢেকে নিজ অস্তিত্বকেই খানিক যত্নের ভাঁজে বিন্যস্ত রাখার প্রয়াস। স্মৃতিচারণায় যেখানে ব্যক্তিক কৃতকর্ম ছাপিয়ে ভাস্বর হয়ে ওঠে অনুষঙ্গজনিত চিরায়ত কোনও ভাষ্য। লেখকের নির্বাচন রবীন্দ্রনাথ, রামকিঙ্কর, ঋত্বিক ঘটক, দীপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, মণিভূষণ ভট্টাচার্য, অরুণ সেন প্রমুখ ব্যক্তি অথবা দুর্গোৎসব, বইমেলা, করোনাকাল ইত্যাদি বিষয়বর্গের আবর্তনে, যা থেকে লব্ধ ছায়াসূত্রগুলো ‘কাল’-চক্রের বলয়ে পুঁতে রাখে অধিত চেতনার জিয়নকাঠি।
আর ‘পাত্র’ অর্থে চেনা চেনা কিছু মুখের মিছিল-ঢেউয়ে অবিরাম নিজেকে ভিজিয়ে রাখার অভিসন্ধি, প্রখর মনমরা যাপনে কিঞ্চিৎ স্নানের আরাম। যেখানে পরিচিত-অপরিচিত নির্বিশেষে লেখকের ভাবনাবৃন্তে ফুটে উঠেছেন নানান প্রেক্ষিতে নানা ‘মনের মানুষ’। একদিকে যেমন আছেন বিজন ভট্টাচার্য, শম্ভু মিত্র, রাধামোহন ভট্টাচার্যের মতো অভিনেতা, তেমনি বিরাজমান কতিপয় কবি-রাম বসু, তরুণ সান্যাল, অমিতাভ দাশগুপ্ত, ইন্দ্রনীল চট্টোপাধ্যায়, নিশীথ ভড়, শুভ বসু কিম্বা কবিসত্তায় আসীন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। ছুঁয়ে গেছেন স্মৃতির বৈভব পৃথ্বীশ গঙ্গোপাধ্যায়, সমীর ভট্টাচার্যের মতো চিত্রশিল্পী, এসেছেন শিল্পী সম্পাদক সাহিত্যিক অজয় গুপ্ত, প্রাবন্ধিক রামকৃষ্ণ ভট্টাচার্য। রয়েছেন ইন্দ্রনাথ মজুমদারের মতো ব্যতিক্রমী প্রকাশক। এবং বিশিষ্ট জীবনচর্যায় তন্ময় অবগাহনে ডুবিয়েছেন শিবাদিত্য সেন আর অধুনা শতবর্ষীয়ান চন্দ্রশেখর বসুর মতো মানুষ।
Reviews
There are no reviews yet